মোবাইল ক্যাসিনোসহ কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে রাঙামাটিতে দু’দফা অভিযানে আটক-৭০ 


আলমগীর মানিক    |    ০৫:৪২ এএম, ২০২৩-০৮-২২

মোবাইল ক্যাসিনোসহ কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে রাঙামাটিতে দু’দফা অভিযানে আটক-৭০ 

আলমগীর মানিক

পর্যটন শহর রাঙামাটিকে শান্তিপূর্ন ও সুশৃঙ্খল রাখতে শহরে উঠতি বয়সী কিশোরদের আড্ডার অভ্যাস দূর করাসহ নেশায় জড়িয়ে পড়ার প্রবণতা ঠেকাতে এবং তারা যেন কোনো ধরনের বাজে আড্ডা,অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে নিজেদের ভবিষ্যত বিনষ্ট করতে না পারে সেই লক্ষ্যে পুলিশ সুপারের বিশেষ নির্দেশনায় রাঙামাটি শহরে মোবাইল ক্যাসিনো, মাদক ব্যবহার, কিশোর গ্যাংসহ বখাটেপনার সাথে জড়িত শিশু-কিশোরদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানের দ্বিতীয় দিনে মাত্র দুই ঘন্টার অভিযানে ৩৩ জন উঠতি বয়সী কিশোরকে আটক করেছে রাঙামাটি কোতয়ালী থানা পুলিশ।

সাড়াঁশি অভিযানের ২য় দিনে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৩৩জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সময়ে রাঙামাটি শহরের ওয়াপদা কলোনি, এডিসি কলোনী, কর্মচারী কলোনী, পর্যটন এলাকা, ধনমিয়া পাহাড়, ওমদামিয়া পাহাড়, মাঝেরবস্তি, শহীদ মিনার এলাকা, উন্নয়ন বোর্ডের পিছনে, নীচের রাস্তা, সিভিল সার্জন অফিস সংলগ্ন এলাকায় সাড়াঁশি অভিযান পরিচালনা করে ৩৩ জন শিশু-কিশোরকে আটক করা হয়।

আটককৃতদের মধ্যে অনেকেই মোবাইল ক্যাসিনো, মাদকের আড্ডাসহ বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত ছিলো। 

পরবর্তীতে তাদের ভবিষ্যত বিবেচনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে আটককৃতদের অভিভাবকদের কোতয়ালী থানায় ডেকে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে আটককৃতদেরকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করে দিয়ে এখন থেকে রাত আটটার পর যেন বাড়ির বাইরে অপ্রয়োজনে না যায়, সেই নির্দেশনা দিয়ে অভিভাবকদের জিম্মায় প্রদান করা হয়। 

এসময় রাঙামাটি পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক দে, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর করিম আকবরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও অভিভাবকগণ থানায় উপস্থিত ছিলেন।  রাঙামাটি শহরে দুই দিনের এই আকস্মিক অভিযানে পুলিশের জালে আটকে যায় মোট ৭০জন তরুণ। 

এদিকে উঠতি বয়সী কিশোর-কিশোরীসহ তরুন প্রজন্মকে রক্ষায় রাঙামাটি পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকরা। তারা বলেন, পুলিশের এই ধরনের অভিযান আরো জোরদার করে চলমান রাখুক। তাহলে আমাদের সন্তানদের একটি সুন্দর ভবিষ্যত রচিত হবে। 

সোমবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে নেতৃত্বদানকারি কোতয়ালী থানার ওসি আরিফুল আমিন জানান, আমাদের পুলিশ সুপার স্যার নির্দেশ দিয়েছেন যে কোনো মূল্যে পর্যটন শহর রাঙামাটি থেকে মাদক নির্মূল এবং বেআইনী আড্ডা বন্ধ করতে হবে। কিশোর তরুণরা নেশায় জড়িয়ে পড়তে পারে এমন যে কোনো সম্ভাবনা নস্যাত করে দিতে হবে।
তাই বখে যেত বসা উঠতি বয়সি কিশোর ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার নির্দেশনা প্রদান করেছেন পুলিশ সুপার। তারই ধারাবাহিকতায় রোববার রাত থেকে (৮-১০) পর্যন্ত অভিযান শুরু করে প্রথম দিনে ৩৭ জনকে আটক করেছিলাম। এবং সোমবার রাত সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘন্টায় মোট ৩৩জনকে আটক করেছি। 

এই অভিযানের উদ্দেশ্য হলো, আমাদের বর্তমান এই উঠতি প্রজন্মের সন্তানরা যাতে অঙ্কুরেই বিনষ্ট না হয় সেই লক্ষ্যেই তাদের অভিভাবকদেরকে সচেতন করা এবং সকল শিশু-কিশোরকে তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে ধারনা দেওয়া। যাতে করে তারা তাদের উজ্জল ভবিষ্যত গড়তে আগ্রহী হয়ে উঠে। তারা যেন ঘরমুখী হয় এবং পিতা-মাতাকে সন্মান করে। 

এখন থেকে রাত আটটার পর থেকে রাঙামাটি শহরের কোথাও উঠতি বয়সি ছেলে-মেয়েদের অহেতুক আড্ডায় দেখলে পুলিশ আটক করবে এমন মন্তব্য করে ওসি বলেন, শহরের যেকোনো প্রান্তে উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েদের আড্ডা বা অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকতে দেখা মাত্রই বং থানা পুলিশ বা ৯৯৯ এ খবর দেওয়ার জন্য জনসাধারণকে আহবান জানিয়েছেন ওসি।